আল্লাহ রাব্বুলআলামিন মুসলমানদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করে দিয়েছেন। এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত অধ্যয়নের জন্য রয়েছে আল্লাহ প্রদত্ত নির্ধারিত সময়সূচী।আধূনিক জ্ঞান বিজ্ঞান নামাজের সময়সূচী বিশ্লেষন করে বিস্ময়কর ফলাফল প্রত্যক্ষ করেছে।
সুবহ সাদেক থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত নির্দৃষ্ট সময় পর পর নামাযের যে সময়সূচী ফরয করা হয়েছে তা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অত্যন্ত স্বাস্থসম্মত।নামাযের সমস্ত কার্যক্রম ব্যায়ামের সাথে তুলনা করা যায়।তবে নামাযকে শুধু ব্যায়াম বললে ভুল হবে,নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর দাসত্ব স্বীকার করে তার বন্দেগী প্রকাশকেই বুঝায়।
ফজরের সময়ঃ
রাত শেষ হয়ে সুবহে সাদেকের শুরু। সারা রাত আরাম করার পর পাকস্থলী খা্লি হয়ে যায়। এ সময় কঠিন শ্রম শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।শরীর শিথিল হয়ে যায়।দাঁতে চোখে ময়লা লেগে থাকে যা রোগজীবানু সংক্রমন করতে পারে।অযুর মাধ্যমে শরীরের ময়লা পরিষ্কার হয় এবং নামাযের মাধ্যমে শরীরটা সারাদিনের জন্য কর্মোপযগী হয়।
যোহরের সময়ঃ
সূর্য ঢলে যাওয়ার সময় বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়।যদি এ বিষাক্ত গ্যাস মানবদেহের শরীরে প্রবেশ করে তাহলে সে বিভিন্ন ধরনের রোগের শিকার হতে পারে। এছাড়া সাকাল হতে মানুষ জীবিকা অর্জনের জন্য স্ব স্ব কর্ম ক্ষেত্রে ব্যস্ত থাকে। দুপুড় হলে শরীরে ক্লান্তি শ্রান্তি এসে ভর করে এবং হাতে পায়ে ময়লা ও রোগজীবানু লেগে যায়। এ সময়ই যোহর গ্যাস এবং বাহ্যিক রোগজীবানু হতে মুক্ত করে এবং নামায পড়ার মাধ্যমে শরীর ও মনকে প্রশান্ত রাখে যা সস্বাস্থের জন্য সহায়ক।
আসরের সময়ঃ
কর্মব্যস্ত দিনটি আসরের মাধ্যমে পরিসমাপ্তির দিকে যেতে থাকে।পৃথিবী সধারনত দুই ধরনের গতিতে চলে, লম্ব ও বৃত্তীয়। আসরের সময় পৃথিবীর ঘূর্ণন একেবারেই কমে যায়।এ কারনে মানুষের উপর দিনের অনুভূতির পর রাতের অনুভূতি প্রবল হতে থাকে।চারপাশে অবসাদগ্রস্থতা পরিলক্ষিত হয়।যার ফলে অচেতন অনুভূতি সচেতন অনুভূতির উপর ক্রিয়াশীল হয়।এই সময়ে আসরের নামায ফরয করা হয়েছে যাতে করে মানুষের শরীর অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্থ না হয় এবং অচেতন অনুভূতির আক্রমনকে সহ্য করার যোগ্য হয়।
মাগরিবের সময়ঃ
সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকার পর পরিবারের নিকট ফিরে আসলে মানুষের মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়। ঠিক এই সময়ে সূর্যটা অস্ত গেলে তার উপড় মাগরিব ফরয হয়ে যায়।যদি কেও আল্লাহকে ভালোবেসে মাগরিবের সালাতে হাজির হয়ে সারাদিনের রুজীরোজগারের জন্য শুকরিয়া আদায় করে তবে তার সন্তানগণ পিতামাতার বাধ্য হয়।তার চারপাশে আনন্দদায়ক পরিবেশ বিরাজ করে।
এশার সালাতঃ
আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞান দ্বারা এটা প্রমাণিত যে খাওয়ার পর হাল্কা ব্যয়াম খাবার হজম হওয়ার জন্য সহায়ক। খাবার সঠিকভাবে হজম না হলে সে খাবার মানুষের জন্য ক্ষতির কারন হয়ে থাকে।এশার সালাতটি অন্য সালাতের চেয়ে দীর্ঘ হওয়ায় ব্যয়ামের চেয়ে তা কোন অংশে কম নয়।যদি কেও রাসূলের নিয়ম মেনে রাতে ঘুমানোর আগে এশার সালাত আদায় করে তবে খাবার সহজে হজম হয়ে শরীর সুস্থ রাখে এবং ঘুম আনন্দদায়ক হয়।
পরিশেষে এটাই প্রতীয়মান হয় যে নামাজ শুধু স্রষ্টার নিকট আত্মসমর্পন নয় শরীর ও মন সুস্থ রাখার অন্যতম চিকিৎসাও বটে।
আবু সুফিয়ান সওরী